কর্মসূচির নাম : প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি কার্যক্রম
ভূমিকা:
প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সভ্যতার ক্রমবিকাশের সাথে সাথে প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী সম্বন্ধে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র এবং বিশ্ব সম্প্রদায়ের দৃষ্টিভঙ্গি এবং দায়িত্ববোধের পরিবর্তন লক্ষণীয়। সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন দেশ প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর কল্যাণ ও উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণসহ আন্তর্জাতিক ফোরামে প্রতিবন্ধী বিষয়ক বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণের অঙ্গীকার প্রদান করেছে। বাংলাদেশ সরকার প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করছে। সামাজিক নিরাপত্তা বিধানে সরকার তার সাংবিধানিক দায়িত্বের অংশ হিসেবে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে ‘প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি প্রদান কর্মসূচি’ বাস্তবায়ন করছে।
পটভূমি:
বাংলাদেশ সংবিধানের ১৫, ১৭, ২০ এবং ২৯ অনুচ্ছেদে অন্যান্য নাগরিকদের সাথে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সমসুযোগ ও অধিকার প্রদান করা হয়েছে। সংবিধানের ১৫ (ঘ) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে, সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার অর্থাৎ বেকারত্ব, ব্যধি বা পঙ্গুত্বজনিত কিংবা বৈধব্য, মাতাপিতাহীনতা বা বার্ধক্যজনিত কিংবা অনুরূপ পরিস্থিতিজনিত কারণে অভাবগ্রস্ততার ক্ষেত্রে সরকারি সাহায্য লাভের অধিকার রয়েছে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩ এর তফসিল ১১ (ক) তে- বিদ্যমান সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী ও দারিদ্র দূরীকরণ কর্মসূচিতে, পর্যায়ক্রমে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, বিশেষ করে, দুঃস্থ ও অসহায় প্রতিবন্ধী শিশু, প্রতিবন্ধী নারী এবং বয়স্ক প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অর্ন্তভুক্তি নিশ্চিত করার বিষয়ে বলা হয়েছে। অনগ্রসর অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকার প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করছে। সামাজিক নিরাপত্তা বিধানে সরকার তার সাংবিধানিক দায়িত্বের অংশ হিসেবে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে ‘প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি প্রদান কর্মসূচি’ বাস্তবায়ন করছে।
প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং দরিদ্র, অসহায়, সুবিধাবঞ্চিত প্রতিবন্ধী শিশু কিশোরদের শিক্ষা লাভের সহায়তা হিসেবে ২০০৭-০৮ অর্থ বছর থেকে ‘প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি প্রদান কর্মসূচি’ প্রবর্তন করা হয়েছে। শুরুতে এ কর্মসূচিতে উপবৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১২ হাজার ২০৯ জন; মাসিক উপবৃত্তির হার প্রাথমিক স্তরে ৩০০ টাকা, মাধ্যমিক স্তরে ৪৫০ টাকা, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ৬০০ টাকা এবং উচ্চতর স্তরে ১০০০ টাকা ছিল। পর্যায়ক্রমে উপবৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ও উপবৃত্তির হারও বৃদ্ধি করা হয়েছে। বর্তমানে প্রাথমিক স্তরে ৯০০, মাধ্যমিক স্তরে ৯৫০, উচ্চমাধ্যমিক স্তরে ৯৫০, উচ্চতর স্তরে ১৩০০ টাকা দেওয়া হচ্ছে।
ভোলা জেলায় মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডার নগদ এর মাধ্যমে জিটুপি পদ্ধতিতে (গভর্মেন্ট টু পারসন) শিক্ষা উপবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে।
কর্মসূচির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
১. প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সামাজিক সুরক্ষা, কল্যাণ ও উন্নয়ন
২. প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ক্ষমতায়ন ও পর্যায়ক্রমে মূলধারায় আনয়ন;
৩. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তি, উপস্থিতির হার বৃদ্ধি, ঝরেপড়া রোধ করে সুশিক্ষায় শিক্ষিতকরণের মাধ্যমে
মনোবল বৃদ্ধি করা;
৪. জাতীয় উন্নয়নে প্রতিবন্ধী ছেলে-মেয়েদের অংশগ্রহণের হার বৃদ্ধি;
৫. প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে সামাজিক মূল্যবোধ ও নৈতিকতা জাগ্রতকরণ;
৬. দরিদ্র প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি করে উচ্চ শিক্ষায় আগ্রহী করে তোলা;
৭. প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীদের কল্যাণ ও সামাজিক সুরক্ষায় সরকার কর্তৃক গৃহীত স্বল্প,মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনায় সন্নিবেশিত করে বিভিন্ন লক্ষ্য অর্জনে ভূমিকা রাখা।
দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা: সমাজসেবা অফিসার, শহর সমাজসেবা কার্যালয়, ভোলা।
শহর সমাজসেবা কার্যালয়, ভোলা এর প্রতিবন্ধী শিক্ষা উপবৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের পরিসংখ্যানঃ
## শহর সমাজসেবা কার্যালয়, ভোলা এর প্রতিবন্ধী শিক্ষা উপবৃত্তি কর্মসূচির সুবিধাভোগীর পরিসংখ্যান:
ক্র. নং |
শিক্ষার ধাপ (স্তর) |
শ্রেণি |
উপকারভোগীর সংখ্যা |
মাসিক ভাতার পরিমান (জনপ্রতি) |
০১ |
প্রাথমিক স্তর |
১ম থেকে ৫ম শ্রেণি/সমমান শ্রেণি
|
১৬ জন |
৯০০ টাকা |
০২ |
মাধ্যমিক স্তর
|
৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি/সমমান শ্রেণি |
০৭ জন |
৯৫০ টাকা |
০৩ |
উচ্চ মাধ্যমিক স্তর |
একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি/সমমান শ্রেণি
|
০১ জন |
৯৫০ টাকা |
০৪ |
উচ্চতর স্তর |
স্নাতক ও স্নাতকোত্তর/সমমান শ্রেণি |
০০ জন |
১৩০০ টাকা |
সর্বোমোটঃ |
২৪ জন |
আইন, বিধি বাস্তবায়ন আইন/নীতিমালা /বিধিমালা /নির্দেশিকা/প্রঞ্জাপণ /পরিপত্র/গুরুত্বপূর্ণ অফিস আদেশ:
১। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি প্রদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন নীতিমালা, ২০১৩
২। প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস